ডেঙ্গু আক্রান্তের গত ১৯ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। গতকাল পর্যন্ত সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৫২৮। এর আগে গত বছর সর্বোচ্চ রোগী ছিল ১০ হাজার ১৪৮ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে সারা দেশে লাখ ছাড়িয়েছে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা আট বলা হলেও বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৩ জনের মৃত্যুসনদে কারণ হিসেবে ডেঙ্গুজ্বর উল্লেখ করা হয়েছে। গতকালও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী উ খেংনু রাখাইন মারা গেছেন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, গত তিন সপ্তাহ ধরে হাসপাতালগুলোয় ভর্তি রোগীর ৯০ ভাগই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। তাদের জন্য হাসপাতালে খোলা হয়েছে আলাদা ইউনিট। কিন্তু এবার আক্রান্ত এত বেশি যে, ডেঙ্গু ইউনিটে স্থানসংকুলান হচ্ছে না। হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ড থেকে শুরু করে মেঝেতে রেখেও চলছে চিকিৎসা। বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা না থাকায় আর ডেঙ্গু রোগী ভর্তি না করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। একের পর এক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তিন দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত যাত্রাবাড়ীর শিশু সীমান্ত (১৪)। গতকাল সকালে হঠাৎ তার রক্তচাপ একেবারে কমে যাওয়ায় দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে তাকে। সীমান্তর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গত বুধবার থেকে জ্বর ওয়ারীর বাসিন্দা নাসিমের (২০)। জ্বরের মাত্রা ১০০ হলেও গতকাল সকালে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে তার। তাই ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগে আসেন তিনি। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছেন, নাসিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তখনই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সীমান্ত ও নাসিমের মতো ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতি ঘণ্টায় ১০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।