Home আইন আদালত দুই জেলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

দুই জেলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

661
0
SHARE

পৃথক হত্যা মামলায় দুই জেলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সব মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন ও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বুধবার কুষ্টিয়ায় কৃষক হত্যায় দুই ভাইসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড চারজনের যাবজ্জীবন ও ৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও স্ত্রীসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

প্রতিনিধিদের খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া মিরপুর থানার পোড়াদহ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কৃষক নুরুল ইসলাম হত্যা ও অগ্নিকাণ্ড মামলায় দুই সহোদরসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

একই মামলায় অপর চারজনের যাবজ্জীবন ও ছয়জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেন আদালত।

সোমবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মুন্সী মো.মশিয়ার রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুদ (৩৮), আনছার আলীর ছেলে পারভেজ (৪৩),সৈয়দ আলীর ছেলে হবিবর রহমান (৫২),সহোদর ফজলুর রহমান (৫৫) ও সরোয়ার হোসেন (৩৯)।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলেন- বিল্লাল হোসেন (৪২), মঞ্জু (৩৪), সোহেল রানা (৩৮), রমিজ আলী (৪০), মতিয়ার রহমান (৫০) ও কবির হোসেন (৪৩)।

একই মামলায় ভুট্টো, রকি, এনায়েত ও সালামকে ৩ বছর এবং নান্নু ও ফরিদকে ৭ বছর কারাদণ্ডসহ প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে,২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ গ্রামে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষ হলে স্থানীয় নুরুল ইসলাম (৫৫)নামের এক কৃষক নিহত হন। এ ঘটনায় তার পূত্র শাহিনুর রহমান সজিব বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ জনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানার করা হত্যামামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ড ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।

কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি অনুপ কুমার নন্দী জানান,আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের চার্জ গঠন পূর্বক দীর্ঘ সাক্ষ্য শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণীত হওয়ায় এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ধার্যকৃত প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ না করলে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের ধার্যকৃত প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে নির্দেশ আদালতের।

একই সঙ্গে এ মামলায় তরিকুল, আকরাম, আশরাফ, ইমরান ও ছালামদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণীত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দিনমজুর রাকিব হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং নিহতের স্ত্রীসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন, প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণীত না হওয়ায় এ মামলায় অপর ৮ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো.শওকত আলী আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হল শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পরানপুর-বলিহারপুরের মেনশাদ মণ্ডলের ছেলে মেহেরাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩৯), একই ইউনিয়নের মহেশপুরের বাহার আলীর ছেলে জামাল উদ্দীন (৪২), ছোট মহেশপুরের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে হজরত আলী (৪২)।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত রাকিব ওরফে বাবুর স্ত্রী সায়েরা খাতুন (৩৪),আলাউদ্দীনের ছেলে মো.মোহবুল (৪৯),মো.মংলুর ছেলে মো. মিটুল (২৪), ছোট মহেশপুর গ্রামের মৃত রবুর ছেলে আসলাম (৪৬)।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আঞ্জুমান আরা জানান,শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পরানপুর বলিহারপুরের নাইমুল ইসলামের ছেলে রাকিব ওরফে বাবু ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।পরদিন সকাল ৭টায় মহেশপুরের মহানন্দা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান,এ ঘটনায় একই সালের ৩০ মার্চ নিহতের পিতা নাইমুল ইসলাম বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরকিয়ার জেরে বাবু খুন হয় বলে পুলিশে তদন্তে উদঘাটিত হয়।

পরে,গত ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তৎকালীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল করিম।