Home প্রবাসী সংবাদ কাতারে হিটস্ট্রোকে মরছে শত শত বিদেশি শ্রমিক

কাতারে হিটস্ট্রোকে মরছে শত শত বিদেশি শ্রমিক

601
0
SHARE

কাতারে তীব্র তাপদাহে হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে শত শত বিদেশি শ্রমিক। দেশটিতে জুন থেকে সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত নিষিদ্ধ সময়ের বাইরেও কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। এর ফলে প্রতি বছরই বিপুলসংখ্যক শ্রমিক মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছে বলে জানিয়েছেন হৃদ-বিশেষজ্ঞরা।

কাতারে গত কয়েক বছরের বিদেশি শ্রমিক মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বুধবার এ তথ্য উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন কেন্দ্র করে কাতারের নির্মাণ খাতে চাপ বেড়েছে।

স্টেডিয়াম, রাস্তা ও হোটেল নির্মাণের জন্য নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ১৯ লাখ শ্রমিক নিয়েছে কাতার। চলতি গ্রীষ্মে এসব বিদেশি শ্রমিকের অধিকাংশকে সর্বোচ্চ ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়েছে।

অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে মধ্য জুন থেকে আগস্টে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাইরে সব ধরনের হস্তচালিত কাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে কাতারি কর্তৃপক্ষ। তবে গত ৯ বছরের আবহাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে বাইরে হস্তচালিত কাজ নিষিদ্ধ করলেই শ্রমিকরা নিরাপদে থাকছে এমনটা নয়।

কার্ডিওলজি জার্নাল নামে এক সাময়িকীতে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কাতারে মারা যাওয়া এক হাজার ৩০০ নেপালি শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করেছেন একদল আবহাওয়াবিদ ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

তাদের মতে, হিটস্ট্রোক বা তীব্র গরমে অসুস্থতাজনিত কারণে এসব শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গবেষকদের মতে, যে মাসগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম গরম পড়েছে সে মাসগুলোতে ২২ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। গ্রীষ্মে এই হার বেড়ে ৫৮ শতাংশে পৌঁছে।

অসলো ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. ড্যান অ্যাটার বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় এটা স্পষ্ট যে, স্বদেশে স্বাস্থ্যের ওপর ভিত্তি করে শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানো হয় এবং তারা উপসাগরীয় অঞ্চলে সুস্থ অবস্থাতেই পৌঁছে। তরুণদের হৃদরোগে আক্রান্তের হার একেবারেই কম। এরপরও কাতারে প্রতি বছর তাদের মধ্যে শত শত লোক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমার স্পষ্ট উপসংহার এটাই যে, এই মৃত্যুগুলোর কারণ হিটস্ট্রোক। তারা যে তাপে কাজ করে তা তাদের দেহ সহ্য করতে পারেনি।’