Home আন্তর্জাতিক অযোধ্যাকাণ্ডের ইতিহাস: বাবর জমানা থেকে মোদি যুগ

অযোধ্যাকাণ্ডের ইতিহাস: বাবর জমানা থেকে মোদি যুগ

292
0
SHARE

১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল ভারতের উত্তরাঞ্চলের শহর অযোধ্যায়। ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত এ অঞ্চলে বহু বছর ধরেই হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিতর্কিত এ পবিত্র স্থানের ইতিহাস পর্যালোচনা করেছে বিবিসি।

১৫২৮ : কিছু হিন্দুর মতে, হিন্দুধর্মের অন্যতম দেবতা রাম যেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেখানে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়।

১৮৫৩ : ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন দুই ধর্মের উপাসনার জায়গা আলাদা করার উদ্দেশ্যে বেষ্টনী তৈরি করে। বেষ্টনীর ভেতরের চত্বর মুসলিমদের জন্য এবং বাইরের চত্বর হিন্দুদের জন্য নির্ধারিত হয়।

১৮৮৫ : বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়ে ফৈজাবাদ জেলা আদালতে প্রথম মামলা দায়ের করেন মোহন্ত রঘুবর দাস।

১৯৪৯ : মসজিদের ভেতর রামের মূর্তি দেখা যায়। হিন্দুরা দাবি করে, এ হল দৈব আবির্ভাব। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মূর্তিগুলো রাখার অভিযোগ ওঠে। মুসলিমরা প্রতিবাদ জানায়। দুই পক্ষই দেওয়ানি মামলা করে। সরকার ওই চত্বরকে বিতর্কিত জায়গা বলে ঘোষণা দেয় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়।

১৯৫৯ : বিতর্কিত জমির স্বত্ব দাবি করে মামলা করে নির্মোহী আখাড়া।

১৯৮৪ : বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে রামের জন্মস্থান উদ্ধার এবং তার সম্মানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কমিটি গঠন করে হিন্দুরা।

১৯৮৬ : জেলার বিচারক আদেশ দেন, বিতর্কিত মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে হিন্দুদের সেখানে উপাসনার সুযোগ দেয়া হোক। মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করে।

১৯৮৯ : বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করে ভিএইচপি।

১৯৯০ : ভিএইচপির কর্মীরা মসজিদের আংশিক ধ্বংস করে। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর আলোচনার মাধমে বিতর্ক সমাধানের চেষ্টা করলেও তা বিফল হয়।

১৯৯২ : ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিব সেনা পার্টির সমর্থকরা মসজিদটি ধ্বংস করে। ফলে পুরো ভারতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

২০০১ : মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই স্থানে মন্দির তৈরির ফের দাবি তোলে ভিএইচপি।

এপ্রিল ২০০২ : জায়গাটির মালিকানার দাবিদার নির্ধারণে তিনজন হাইকোর্ট বিচারক শুনানি শুরু করেন।

জানুয়ারি ২০০৩ : আদালতের নির্দেশে নৃতত্ত্ববিদরা জরিপ শুরু করেন। আগস্টে প্রকাশিত জরিপে জানা যায়, মসজিদের মাটির নিচে বিশাল কাঠামো খুঁজে পাওয়া গেলেও তা মন্দির ছিল- এমন প্রমাণ মেলেনি।

সেপ্টেম্বর ২০০৩ : মসজিদ ধ্বংসের পেছনে উসকানি দেয়ায় সাত হিন্দু নেতাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে রুল দেন আদালত।

২০০৯ : মসজিদ ধ্বংস অনুসন্ধান করতে থাকা লিবারহান কমিশন তদন্ত শুরুর ১৭ বছর পর প্রতিবেদন জমা দেয়। নভেম্বরে প্রকাশিত লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে মসজিদ ধ্বংসের পেছনে বিজেপির ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

সেপ্টেম্বর ২০১০ : এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয়, স্থানটির নিয়ন্ত্রণ মুসলিম, হিন্দু এবং ‘নির্মোহী আখারা’ গোষ্ঠীর মধ্যে তিন ভাগে ভাগ করে দেয়া উচিত।

মে ২০১১ : ২০১০ সালের রায়ের বিরুদ্ধে হিন্দু ও মুসলিম দুই পক্ষই আপিল করে।