Home জাতীয় নিয়ম মানছে না বেশির ভাগ সংসদীয় কমিটি

নিয়ম মানছে না বেশির ভাগ সংসদীয় কমিটি

222
0
SHARE

একাদশ জাতীয় সংসদ যাত্রা শুরুর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ৫০টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি করা হয়েছিল। দ্রুততার সঙ্গে কমিটি গঠন করা হলেও কাজের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ কমিটির তেমন তৎপরতা নেই। মাসে অন্তত একটি বৈঠক করার নিয়মও মানছে না বেশির ভাগ কমিটি।

সংসদীয় কমিটির প্রধান কাজ কমিটির আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের কাজ পর্যালোচনা, অনিয়ম ও গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করা। বিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া বা সুপারিশ করাও সংসদীয় কমিটির কাজ। কিন্তু অনেক কমিটি মন্ত্রণালয় থেকে নানা ধরনের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংসদীয় কমিটির কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও আলোচনা হচ্ছে কমিটিতে। চাইছে মন্ত্রণালয়ের খরচে বিদেশ ভ্রমণে যেতে।

জাতীয় সংসদে মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত ৩৯টি এবং বিষয় বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ১১টি স্থায়ী কমিটি আছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর—এই ১০ মাসে প্রতিটি কমিটির ন্যূনতম ১০টি বৈঠক করার কথা।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, এই ১০ মাসে বেশির ভাগ কমিটিই নিয়ম অনুযায়ী বৈঠক করেনি। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক মাত্র ৩টি সংসদীয় কমিটি ১০টি বা তার বেশি বৈঠক করেছে। ৭টির কম করে বৈঠক করেছে ২৪টি কমিটি। তিনটি করে বৈঠক করেছে জনপ্রশাসন, খাদ্য, অর্থ, ভূমি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে, যে কারণে নিয়মিত বৈঠক করতে পারেননি।

চারটি করে বৈঠক করেছে ধর্ম; পার্বত্য চট্টগ্রাম; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি; তথ্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রুহুল হক মাদানী প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ব্যস্ত থাকেন। মন্ত্রী না থাকলে কমিটির সদস্যরা বৈঠক করতে চান না। এ কারণে বৈঠকের সংখ্যা কিছু কম। তবে সামনে নিয়মিত বৈঠকের আয়োজন করা হবে।

প্রতিরক্ষা, যুব ও ক্রীড়া, পরিকল্পনা, সমাজকল্যাণ, বাণিজ্য, শিল্প এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি গত ১০ মাসে ৫টি করে বৈঠক করেছে।

ছয়টি করে বৈঠক করেছে আইন, সংস্কৃতি, শ্রম ও কর্মসংস্থান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। পানিসম্পদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত, শিক্ষা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সাতটি করে বৈঠক করেছে।

গত ১০ মাসে ৮টি করে বৈঠক করেছে বস্ত্র ও পাট, কৃষি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। আর মহিলা ও শিশু এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ৯টি করে বৈঠক করেছে।

জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে বলা আছে, কোনো কারণে কমিটির বৈঠক আহ্বান করা সম্ভব না হলে স্পিকার কমিটির সচিবকে বৈঠক আহ্বানের নির্দেশ দিতে পারবেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মনে হয় বেশির ভাগ কমিটি নিয়মিত বৈঠক করে। বিশেষ কারণে কোনো কোনো কমিটি নিয়মিত বৈঠক করতে না পারলে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।

মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কমিটিগুলোর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি সর্বোচ্চ ১৩টি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ১১টি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ১০টি বৈঠক করেছে।