Home অর্থ-বাণিজ্য শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান

শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান

86
0
SHARE

সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমার সংবাদে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে গতি দেখা যাচ্ছে লেনদেনেও।

প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ৪৭ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার ওপরে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে ভালো গতি দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে মূল্য সূচক।

এদিন ডিএসইতে প্রথম মিনিটের লেনদেনে অংশ নেয় ১৩টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৯টির দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে একটির এবং তিনটির দাম অপরিবর্তিত থাকে। ফলে প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্টের বেড়ে যায়।

শুরুর এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা জুড়েই থাকে এবং সময়ের সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বড় হতে থাকে দাম বাড়ার তালিকা।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের তুলনায় ৩৪ পয়েন্টে বেড়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৭ পয়েন্ট।

এসময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬টির। আর ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৬৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮২ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৩৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৪টির, কমেছে ৩০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির।

এদিকে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের স্কিমগুলোর মুনাফার হার কমিয়ে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

নতুন হার অনুযায়ী, ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের স্কিমে মুনাফার হার আগের মতো রাখা হলেও, এর বেশি পরিমাণ স্কিমে মুনাফার হার কমানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যারা নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনবেন, শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এই হার কার্যকর হবে। এছাড়া আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি পুনঃবিনিয়োগ করলে তখন নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয়ের জন্যই নতুন এই মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে। এছাড়া যৌথ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিনিয়োগকারী সব সঞ্চয় স্কিমে মোট বিনিয়োগের ওপর প্রযোজ্য হারে মুনাফা পাবেন।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। তবে নতুন নিয়মে এই সঞ্চয়পত্রে যারা ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করলে মুনাফার হার হবে সাড়ে ৯ শতাংশ। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফার হার আগের মতোই থাকবে।

তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ। সেটি এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমিয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যাবে ৯ শতাংশ। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফার হার আগের মতোই থাকবে।

অবসরভোগীদের জন্য নির্ধারিত পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে এতদিন ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যেত। এখন এই সঞ্চয়পত্রে যারা ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করলে এই হার হবে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মুনাফার হার আগের মতোই থাকবে।

পরিবার সঞ্চয়পত্রের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে মুনাফার হার বর্তমানে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে এখন থেকে এই সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার কমিয়ে করা হয়েছে সাড়ে ১০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই হার সাড়ে ৯ শতাংশ। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এর মুনাফার হার আগের মতোই থাকবে।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে মুনাফার হারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই স্কিমের মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ রাখা হয়েছে।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তবে নতুন নিয়মে এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এছাড়া ওয়েজ আর্নার’স ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের বর্তমান মুনাফার হার ১১ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে নতুন হারে ১৫ লাখের বেশি বিনিয়োগ করলে মুনাফা মিলবে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর ৩০ লাখের বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাওয়া যাবে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এছাড়া বিনিয়োগ ৫০ লাখের বেশি হলে ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে।