Home অর্থ-বাণিজ্য অক্টোবরে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ

অক্টোবরে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ

59
0
SHARE

করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। ফলে বাড়ছে আমদানি, রফতানিসহ অর্থনীতির প্রায় সব সূচক। সেই সাথে বাড়ছে বিনিয়োগ বৃদ্ধিও অন্যতম সূচক বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিও হার। অক্টোবর শেষে অর্থনীতির এই সূচকটি বেড়ে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশে উঠে এসেছে।

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে গত কয়েক মাস অল্প অল্প করে বাড়লেও অক্টোবর মাসে বেশ খানিকটা বেড়ে তবে এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক নিচে রয়ে গেছে এই সূচক।

অর্থনীতির গবেষক ও ব্যাংকাররা বলছেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশ। আমদানি-রফতানি বাড়ছে সমান তালে। সব কিছু করোনার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। সে কারণে অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোর মতো বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি সেপ্টেম্বরের চেয়ে প্রায় ১ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ হলো, গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে এই অক্টোবরে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি ঋণ পেয়েছেন। সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুলাই মাসে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিল, তাতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয় ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর শেষে উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যের চেয়ে এখনও ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ পয়েন্ট কম ঋণ নিয়েছেন।

এর আগে, দীর্ঘদিন ধরে দেশে বিনিয়োগে মন্দা চলছে। এর অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের চিত্রও ছিল হতাশাজনক। গত বছরের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে তা আরও কমতে থাকে। প্রতি মাসেই কমতে কমতে মে মাসে তা ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে আসে, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, মহামারির ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি কমে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশে নেমে আসে। এরপর সরকারের প্রণোদনা ঋণে ভর করে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এই প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ হয়। আগস্টে তা আরও বেড়ে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশে এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশে ওঠে। কিন্তু অক্টোবরে এই বৃদ্ধি কমে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশে নেমে আসে। নভেম্বরে তা আরও কমে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ হয়। ডিসেম্বরে সামান্য বেড়ে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়।

২০২১ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৫১ ও ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এপ্রিলে নেমে আসে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশে। মে মাসে তা আরও কমে নেমে যায় ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশে। তবে করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ঋণ প্রবৃদ্ধি খানিকটা বেড়ে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশে উঠে কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। তারপর থেকে ঋণ প্রবাহ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। জুলাই ও আগস্টে এই সূচক ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৩৮ ও ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবর শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। গত বছরের অক্টোবর শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এ হিসাবেই অক্টোবর মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ।