Home বিনোদন পল্লবী-সাগ্নিকের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বান্ধবী ঐন্দ্রিলা

পল্লবী-সাগ্নিকের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বান্ধবী ঐন্দ্রিলা

44
0
SHARE

অভিনেত্রী পল্লবীর মৃত্যু নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা টেলি ইন্ডাস্ট্রিতে। পল্লবীর বন্ধু-বান্ধবীদের কথায়, পল্লবী (Pallavi Dey) আত্মহত্যা করার মেয়েই নয়। অন্যদিকে, পল্লবীর মা-বাবা সাগ্নিক ও তাঁর বান্ধবী ঐন্দ্রিলার বিরুদ্ধে খুন, প্রতারণা, সম্পত্তি হস্তগত করা, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন। এই অভিযোগ নিয়ে ঐন্দ্রিলা জানিয়েছেন, ‘আমি জানতে পারলাম যে, আমার নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু আমি জানি না, কেন এই অভিযোগ। আমার সম্পর্কে নানা কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, পল্লবী আর সাগ্নিক দু’জনই আমার বন্ধু। বরং অল্প সময়ের মধ্যে পল্লবী আরও ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার কোনও ইচ্ছাই কোনওদিন আমার ছিল না। সাগ্নিককে নিয়ে পল্লবীর সঙ্গে কোনও গোলমাল আমার হয়নি। দিন পাঁচেক আগে পল্লবী, যাকে আমরা মিষ্টি বলেই ডাকতাম, সকালে ফোন করে বলল, তুই আজ ফ্রি আছিস? সন্ধ্যাবেলায় একটা নাটকের শো আছে। তাহলে আমরা দু’জন মিলে দেখতে যাব। অসুস্থতার জন্য আমি শয্যাশায়ী ছিলাম। তাই আমি জানিয়ে দিই সম্ভব নয়। বলি, একটা মাস কাটুক। তার পর না হয় দেখা করব। এটাই পল্লবীর সঙ্গে আমার শেষ কথা। এই মাসের প্রথম দিকে একটা বিয়েবাড়ি ছিল। সেখানে সব বন্ধুরা আমন্ত্রিত ছিল। বিয়েতে সবাই মিলে যাই। বিয়েবাড়িতে খাওয়াদাওয়া সারতে সারতে রাত সাড়ে বারোটা বেজে গিয়েছিল। যেহেতু জয়েন্ট ফ্যামিলি, তাই গেট লক করে দেওয়া হয়। আমাদের সঙ্গে আরও দু’টো বন্ধু ছিল।

ঐন্দ্রিলা আরও জানান, ‘পল্লবী তখন বলে, রাতটা গড়ফার ফ্ল্যাটে কাটিয়ে দিয়ে সকালে বাড়ি যেতে। আমি সেই প্রথমবার ও একবারের জন্যই ওই ফ্ল্যাটে যাই। কিন্তু আমি একা কখনও ওই ফ্ল্যাটে যাইনি। সেদিন রাতে সাগ্নিক খুব অসুস্থ হয়ে গেলে আমরা ওকে চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যাই। পল্লবীকে আমি চিনি গত চার বছর ধরে। আমি হাওড়ার জগাছার বাসিন্দা। ক্লাস নাইন থেকেই আমাদের একটা বন্ধুদের গ্রুপ ছিল। তারপর একজনের থেকে অন্যজনের সঙ্গে আলাপ পরিচয় হয়। তারপর মিষ্টি আর আমি একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত করতাম। এর মধ্যে বছর দেড়েক আমাদের মধ্যে কথা বন্ধ ছিল। এটা সাগ্নিক ও পল্লবীর সম্পর্ক তৈরি হওয়ার আগের কথা। পল্লবীর এর আগেও রেহান নামে একজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। রেহানের সঙ্গে পল্লবীর ঝামেলা ও ছাড়াছাড়ি হয়। আমরা কয়েকজন রেহানের পক্ষ নিই। তখন পল্লবী ওর ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুদের সঙ্গেই সময় কাটাত। ধীরে ধীরে একে অন্যের স্টেটাসে কমেন্ট করতে শুরু করলাম। তারপর টেকনিশায়ানে গিয়ে মিষ্টির সঙ্গে দেখা করি।

ঐন্দ্রিলা জানান, ‘সাগ্নিককে আমি চিনতাম পল্লবীর আগে থেকে। আমি, সাগ্নিক, রেহানরা একই স্কুলে পড়াশোনা করেছি। রেহানের মাধ্যমে চিনি ওর বান্ধবী পল্লবীকে। তার পর সাগ্নিকের সঙ্গে পল্লবীর সম্পর্ক তৈরি হল। লিভ ইন করতে শুরু করল ওরা। আমার যেটুকু বন্ধুত্ব পল্লবীর সঙ্গেই ছিল। সাগ্নিকের সঙ্গে বিশেষ কথা হত না। আবার সাগ্নিকের ব্যাপারেও বেশি জানতে চাইতাম না পল্লবীর থেকে। আমরা আজ আছি কাল নেই। ফলে সম্পর্ক খারাপ করে কী হবে? পল্লবীর হাওড়ার বাড়িতে ওর জন্মদিন, পারিবারিক অনুষ্ঠান ছাড়াও বহুবার গিয়েছি। এমনকী, রাতেও থেকেছি। ও আমাদের বাড়িতে আসত। কিন্তু আমার সঙ্গে পল্লবীদের কোনও আর্থিক লেনদেন হয়নি।

রবিবার সকালে পল্লবীর এক বান্ধবী আমায় ফোন করে বলে, তুই কি জানিস পল্লবীর কি হয়েছে? আমি কিছুই জানতাম না। আমি পল্লবীকে ফোন করি। ফোনে না পেয়ে মেসেজ করি। উত্তর না পেয়ে ওর ভাই আর সাগ্নিককে ফোন করি। শেষে ওর ভাই বলে, দিদি আর নেই। খবর পেয়েই বাঙুর হাসপাতালে যাই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, শুনেই আমি স্তম্ভিত। কেন এই অভিযোগ, তা জানি না। তার আগে কিন্তু আমার সঙ্গে সাগ্নিক বা পল্লবীর কোনও কথা হয়নি। আমাকেও বাঁচতে হবে। আমারও ভবিষ্যৎ আছে। কেরিয়ার আছে। আমার কেরিয়ার নষ্ট করতে চাইছে ওর বাড়ির লোকেরা। কেন করছে জানি না। যদি আমাকে এতটাই অপছন্দ ছিল, পল্লবীকে বারণ করতে পারত আমার সঙ্গে মিশতে। আমাদের মধ্যে ফোনে খুব সাধারণ কথাবার্তা হত। কলকাতা থেকে হাওড়ায় এলেও দেখা করে যেত। কোনও খারাপ সম্পর্ক ছিল না। পল্লবীর মা বা কাকিমা আমাকে নিজের মেয়ে বলত। রবিবার আমি কাকিমার মেয়ের দেহের সামনে চোখের জল নিয়ে সারাদিন বসে ছিলাম। সেখানে কেন এই কথা বলল ওরা। আমার উপর নোংরা অভিযোগ আরোপ করা হচ্ছে। পল্লবী আর সাগ্নিক লিভ ইন করত। সেখানে আমার চরিত্র হনন করা কেন? এসব দেখে বাড়ির লোকেরা দেখে অসুস্থ হচ্ছেন। তবে আমি পুলিশকে সহযোগিতা করে যাব।’