Home জাতীয় বে-টার্মিনাল নির্মাণে চূড়ান্ত নকশা করতে চুক্তি

বে-টার্মিনাল নির্মাণে চূড়ান্ত নকশা করতে চুক্তি

47
0
SHARE

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নে চুক্তি সই হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ চুক্তিপত্র সই হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট হোয়াং কিউ ইয়াং। দক্ষিণ কোরিয়ার অপর আরেকটি প্রতিষ্ঠান হলো ‘ডিয়েন ইয়াং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড’।

চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পের বিস্তারিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে মাল্টিপারপাস টার্মিনালের বিস্তারিত প্রকৌশল নকশা, ড্রয়িং ও প্রাক্কলনের জন্য পরামর্শক সেবা দেবে এই দুই প্রতিষ্ঠান। এছাড়া কোরিয়ার যৌথ প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজের তদারকিও করবে। এজন্য ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। সম্পূর্ণ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২১০ কোটি ডলার।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বাড়াতে নতুন টার্মিনাল হিসেবে ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণ হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা এখানে ভিড়তে পারবে জাহাজ। বে-টার্মিনাল চ্যানেলে কোনো বাঁক নেই। যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১০-১২ মিটার ড্রাফটের সর্বোচ্চ ছয় হাজার টিইইউজ বহনক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ বার্থিং করানো সম্ভব হবে।

বে-টার্মিনালে প্রাথমিকভাবে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ হবে। যেখানে একটি এক হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-১), একটি ৮৩০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-২) এবং একটি এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মিত হবে।

তিনটি টার্মিনালের মোট দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার। মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ টার্মিনালে জেটি থাকবে ছয়টি। বে-টার্মিনালে মোট ১৩টি জেটি থাকবে। বে-টার্মিনালে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি সুবিধা থাকবে। প্রকল্পের পূর্ব দিকে রয়েছে পোর্ট অ্যাকসেস রোড ও রেলপথ। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলোতে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফট এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারে। চট্টগ্রাম বন্দর জোয়ারের ওপর নির্ভর হওয়ায় দিনে দুইবার নেভিগেশন হয়ে থাকে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর হালিশহরে বে-টার্মিনালের অবস্থান। বে-টার্মিনাল থেকে বর্হিনোঙরের দূরত্ব এক কিলোমিটার। চ্যানেলের প্রশস্ততা ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ মিটার। এই টার্মিনালকে বৈরি আবহাওয়া এবং সাগরের বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ করতে হবে, যা ওই এলাকার ডুবোচরের ওপর নির্মিত হবে বলে জানিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বলতে পারি বে-টার্মিনাল স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তবতা। ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক বড় ক্যানভাস তৈরি হয়েছে। শিগগির ব্যবসা-বাণিজ্যের সুফল পাব।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল শিগগির চালু হতে যাচ্ছে। বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে রেললাইন যুক্ত হবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি।’

চট্টগ্রাম চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বে-টার্মিনালের কাজ এগিয়ে নিতে কোরিয়ান দুই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে বে-টার্মিনাল নির্মাণের আরও এক ধাপ আমরা এগিয়েছি। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে তারা পূর্ণাঙ্গ নকশা জমা দেবে।