উজবেকিস্তানের স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ কারাকালপাকস্তানে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া চলমান অস্থিরতায় পুলিশ ও জনতা সংঘর্ষে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও প্রায় ২৪৩ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৪ জুলাই) উজবেক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
উজবেকিস্তানের স্বায়ত্তশাসিত কারাকালপাকস্তান অঞ্চলের বিশেষ মর্যাদা বদলে সংবিধান সংশোধনের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। পর্যবেক্ষকদের মতে, গত ২০ বছরে দেশটিতে এমন বিক্ষোভ দেখা যায়নি।
চলমান এ বিক্ষোভ দেশটির প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিয়োয়েভের ক্ষমতার প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। ২০১৬ সালে সাবেক উজবেক নেতা ইসলাম কারিমোভের মৃত্যুর পর প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এরপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন শাভকাত মির্জিয়োয়েভ।
শনিবার (২ জুলাই) প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিয়েভ কারাকালপাকস্তানের স্বায়ত্তশাসন এবং প্রদেশটির বিচ্ছিন্ন হওয়ার অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানের অনুচ্ছেদটি বাতিলের পরিকল্পনা করেছেন। একই সঙ্গে তিনি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে মাসব্যাপী জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেন।
উজবেকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কারাকালপাকস্তান। এখানকার বাসিন্দারা কারাকালপাক নামে পরিচিত। এ স্বতন্ত্র জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা রয়েছে। যার উজবেকের চেয়ে কাজাখ ভাষার সঙ্গেই বেশি মিল। উজবেকিস্তানের বর্তমান সংবিধানে অঞ্চলটিকে অভ্যন্তরীণ ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সংবিধানের সংশোধিত সংস্করণে কারাকালপাকস্তানকে আর সার্বভৌম হিসেবে বিবেচনা করা হবে না বা তাদের পৃথক হয়ে যাওয়ার অধিকার থাকবে না। আগামী মাসগুলোতে ওই সংশোধিত সংবিধানের বিষয়ে একটি গণভোটের পরিকল্পনা করছে উজবেকিস্তান। এ কারণে বিক্ষোভ শুরু করে সেখানকার সাধারণ মানুষ।
সরকারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা গত শুক্রবার (১ জুলাই) প্রাদেশিক রাজধানী নুকুসে মিছিল বের করে এবং স্থানীয় সরকারি ভবন দখলের চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও সহিংসত ঘটে। ফলে ১৮ জন নিহত হয়।
উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিয়োয়েভ নিহতের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি ভবনে হামলা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত বেসামরিক ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
দেশটির ন্যাশনাল গার্ডের প্রেস অফিসে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এদিন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার সময় নিরাপত্তা বাহিনী ৫১৬ জনকে আটক করে। পরে তাদের অনেককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।