Home আন্তর্জাতিক পুরো ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দখলের পথে এগোচ্ছে রাশিয়া

পুরো ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দখলের পথে এগোচ্ছে রাশিয়া

39
0
SHARE

লিসিচানস্ক শহর দখলের মাধ্যমে ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে চলে যাবার পর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযান অব্যাহত রাখার জন্য তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন।

রুশ টিভিতে দেখা যায়, ‘পূর্ব-অনুমোদিত পরিকল্পনা’ অনুযায়ী লক্ষ্য অর্জনের প্রয়াস চালিয়ে যাবার জন্য রুশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান পুতিন।

‘রাশিয়ার লক্ষ্য হচ্ছে পুরো ডনবাস অঞ্চলটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়া’- বলছেন লুহানস্কের গভর্নর।

রুশ বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনীয় শহর লিসিচানস্কের পতনের পর, সোমবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন যে পুরো লুহানস্ক অঞ্চল এখন ‘মুক্ত’।

পুতিন লুহানস্ককে মুক্ত করার জন্য রুশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অবশ্য লিসিচানস্ককে রুশদের দখল থেকে মুক্ত করা হবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন।

লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেছেন, তার ধারণা মস্কো এখন দোনেৎস্ক অঞ্চলের স্লোভিয়ানস্ক এবং বাখমুট- এই শহর দুটোর ওপর আক্রমণ কেন্দ্রীভূত করবে। সেখানে ইতোমধ্যেই গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে।

স্লোভিয়ানস্ক শহরের আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠতে দেখা যাচ্ছে বলে বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথন বিল জানিয়েছেন।

রবিবারই রুশ কামানের গোলায় দুটি শিশুসহ ৬ জন বেসামরিক লোক নিহত ও আরও ১৯ জন আহত হয়। লিমান নামে একটি নিকটবর্তী ছোট শহর ইতোমধ্যেই রুশ বাহিনী দখল করে নিয়েছে। ক্রামাটরস্ক শহরটিও এখন লিসিচানস্কের দিক থেকে অগ্রসরমান রুশ বাহিনীর কামানের পাল্লার মধ্যে এসে গেছে।

বাখমুট ও স্লোভিয়ানস্কের মাঝখানে একটা প্রতিরক্ষা লাইন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী, কিন্তু সেখানেও এখন ভারী গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে।

মস্কো বলেছে, ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ সামরিক অপারেশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে পূর্ব ইউক্রেনকে জাতীয়তাবাদীদের হাত থেকে ‘মুক্ত’ করা।

সেরহি হাইদাই বিবিসিকে বলেছেন, রুশ সৈন্যরা গোলাবর্ষণ করে পুরো লিসিচানস্ক শহরটিকেই ‘কার্যত মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে’।

রাশিয়ার চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান রমজান কাদিরভ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে চেচেন যোদ্ধারা লিসিচানস্কের কেন্দ্রে পৌঁছেছে বলে দেখা যাচ্ছে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে লিসিচানস্কের পতন ইউক্রেনের জন্য এই লড়াইয়ে কৌশলগত দিক থেকে একটা বড় বিপর্যয়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, ডনবাস অঞ্চলে লড়াই শেষ হয়ে গেল। ইউক্রেনের বাহিনী এখনো পার্শ্ববর্তী দোনেৎস্ক অঞ্চলের বড় বড় নগর কেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

অন্যদিকে কৃষ্ণসাগরের স্নেক আইল্যান্ড থেকে রুশ সৈন্যরা চলে যাবার পর সেখানে ইউক্রেনের পতাকা ওড়ানো হয়েছে বলে একজন সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন।

রাশিয়া অভিযোগ করেছে যে তাদের সীমান্তবর্তী শহর বেলগোরদের ওপর ইউক্রেন তিনটি ক্লাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

বেলগোরদের গভর্নর বিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ বলেছেন, এতে ১১টি আবাসিক ভবন এবং ৩৯টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মস্কো বলেছে, তাদের বিমানবিধ্বংসী কামান ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদীদের ছোড়া তিনটি টশকা-ইউ ক্লাস্টার ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কো এর আগেও রাশিয়ার ভেতরে বিমান হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছে। তবে কিয়েভ কখনো এসব ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।

সবশেষ ঘটনা সম্পর্কে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বিবিসিকে বলেন, তারা এ ঘটনার জন্য দায়ী নন বরং এটা কোন লক্ষ্যভ্রষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র বা ‘রুশ উস্কানি’ হতে পারে।
খবর বিবিসি