Home জাতীয় রাষ্ট্রদূতদের প্রতি ২৪ ইস্যুতে সরকারের নির্দেশনা

রাষ্ট্রদূতদের প্রতি ২৪ ইস্যুতে সরকারের নির্দেশনা

28
0
SHARE

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-র‌্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞা এখনও প্রত্যাহার হয়নি। নতুন করে আরও সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তির নিষেধাজ্ঞা আসার গুঞ্জন আছে। এমন অবস্থায় যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা ঠেকানোর প্রস্তুতি নিতে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বিদেশে বাংলাদেশি দূতদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
গত ডিসেম্বরে দেওয়া নির্দেশনায় নির্বাচনের আগে বেশ কিছু বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা, বৈশ্বিক ও স্থানীয় রাজনীতির দিকেও চোখ রাখাসহ ২৪টি ইস্যু উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর এসব নির্দেশনা দিয়ে ২০২৩ সালে রাষ্ট্রদূতদের করণীয়সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। সাত পাতার ওই চিঠিতে মোট ২৪টি ইস্যু তুলে ধরা হয়।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‍্যাবের সাতজন সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই নির্দেশনা প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশের তরফ থেকে একাধিকবার অনুরোধও করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে আর যেন কোনো নিষেধাজ্ঞা না আসে, সে বিষয়ে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কূটনীতিকদের দেওয়া চিঠিতে সাতটি অগ্রাধিকার ঠিক করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সরকারের জন্য অস্বস্তি তৈরি করেছে। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। এর বাইরে সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে ওয়াশিংটনের গভীর উদ্বেগ সরকারের জন্য নতুন এক অস্বস্তি সামনে এনেছে। এই প্রেক্ষাপটে ১ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সমন্বয় সভা হয়।
ওই সভায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকারের সব পক্ষ যাতে অভিন্ন সুরে কথা বলে, সে বিষয়টি আলোচিত হয়। রাষ্ট্রদূতদের কাছে পাঠানো পররাষ্ট্র সচিবের চিঠি তারই ধারাবাহিকতা বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সচিবের দেওয়া সেই নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেকোনো কূটনীতিক মিশনের মৌলিক কাজ হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখার মধ্য দিয়ে দৈনন্দিন কাজ এগিয়ে নেওয়া। তবে বর্তমান বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আরও বাড়তি কাজের চাহিদা রয়েছে। ’
নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের একটি বিশেষায়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সরকার ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে সরকারি সংস্থা-ব্যক্তির ওপর একই প্রেক্ষাপটে বা অন্য কারণে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এজন্য নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে প্রস্তুত থাকার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি সময় অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। সময়ে সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আপনাদের হালনাগাদ তথ্য ও নির্দেশনা দেবে।’
নিষেধাজ্ঞার মতো ক্ষতিকর পদক্ষেপ ঠেকাতে সর্বদা প্রস্তুত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয় চিঠিতে।
পররাষ্ট্রসচিব চিঠি পাঠানোর এক দিন পর নতুন বছরের প্রথম দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন।
এদিকে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, চলতি বছর সংস্থা হিসেবে র‍্যাব ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানাবে সরকার।
এর আগে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশে-বিদেশে নানা নেতিবাচক প্রচারণা ঠেকাতে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত ওই কমিটি অপপ্রচার প্রতিরোধের কাজ করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।