বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তি উপলক্ষে, চীন আগামী মার্চে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ২৭-২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিতব্য বাও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দিতে ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এই ফোরামে এশিয়া ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বিভিন্ন দেশের নেতা, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষাবিদরা অংশ নেন। বেইজিং সফরে যাওয়ার ফাঁকে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ সোমবার চীন যাচ্ছেন, এবং ২১ জানুয়ারি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুই দেশের সহযোগিতা আরো বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতার দিকে নজর দেওয়া হতে পারে, যেমন চীনের সহায়তায় বাংলাদেশে মৈত্রী হাসপাতাল স্থাপন এবং কুনমিংসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশের রোগীদের জন্য কম খরচে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।
চীন বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীসহ নানা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।
২০১৬ সালে সই হওয়া তিস্তা পানির ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমঝোতা স্মারক নবায়নের বিষয়টি আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে। এছাড়া, চীন তিব্বতে মেগা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যার ফলে ভাটির দেশগুলোর পানির প্রাপ্যতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের কাছে সুদের হার কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনার এবং ঋণ সম্পর্কিত ফি বাতিল করার আবেদন জানানো হবে।
এছাড়া, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ, এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে রোহিঙ্গাদের পক্ষে থাকার আহ্বান জানাবে।
এদিকে, চীন বাংলাদেশকে আরো বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছে। ৫ আগস্টের পর চীন বাংলাদেশে ২০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং দেশের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে আরো সহযোগিতা প্রস্তাব করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা আরো তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, দুই দেশের সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে, এবং বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতায়।