Home জাতীয় ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি : জামায়াত আমির

ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি : জামায়াত আমির

SHARE

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বৃষ্টি হলেই তিস্তা পাড়ের মানুষ সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন। দীর্ঘদিনেও এই সমস্যার সমাধান হয়নি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার ইশারা ও ইঙ্গিতে বন্ধ হয়ে আছে, কেন কাজ শুরু হলো না—বাংলাদেশের জনগণ অবশ্যই তা জানার অধিকার রাখে। ফ্যাসিষ্ট সরকারের কারণে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি।

আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সন্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের নামে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। বিদেশে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। শেষ দিন পর্যন্ত মানুষ খুন করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল।
প্রতিটি খুনের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘৫ আগস্টের পর জামায়াতের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজী, দখলবাজী, মামলা বাণিজ্য করেননি। শত শত নিরীহ মানুষকে মামলায় ঢুকিয়ে তাদের কাছ থেকে টাক আদায় করেননি।
ঘুষের ভাগাভাগিও করেননি। এরপরেও শয়তানের খপ্পরে পড়ে কেউ বিপদগামী হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আমরা শহীদদেরকে কোনো দলীয় সম্পত্তিতে পরিণত করতে চাই না জানিয়ে জামায়ার আমির বলেন, ‘বিনয়ের সঙ্গে বলব, শহীদদের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে যায় এমন কাজ দয়া করে কেউ করবেন না। চাঁদাবাজি, দখলবাজি, জুলুম করলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে। তবে কেউ অপকর্ম অব্যাহত রাখলে আমাদের লড়াইও অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে একের পর এক প্রতিহিংসামূলক রায়ের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে। ৫ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাদের নিকট অনেক নাটক করলেও তারা প্রাণ ভিক্ষা চাননি।’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার অন্যায়ভাবে জামায়াতের নেতাসহ রাজনৈতিক নেতাদের জেলে পুরেছিল। তাদের অনেকেই বের হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দুঃখ জামায়াতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলাম এখনো জেলে। আমরা কারো দয়া নয়, আইনি লড়াইয়ে তাকে মুক্ত করতে চাই। কিন্তু আইনের প্যাচে মেহেরবান কর আর দিবেন না। যদি আইনের প্যাচে কষ্ট দেন, আমরা বাধ্য হবো তাকে মুক্ত করতে রাস্তায় নামতে।’

অবহেলিত জেলা কুড়িগ্রামের ক্ষেত্রে নানা বৈষম্য ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এখানে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও তার নিজম্ব কোনো ক্যাম্পাস নেই। অথচ এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্র হতে পারে, এই এলাকার চেহারা বদলে দিতে পারে।’ তিনি মানুষের চিকিৎসার ভোগান্তি দূর করতে একটি মেডিক্যালে কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘জামায়াত ক্ষমতায় এলে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর মুখ দেখে কোনো এলাকার উন্নয়ন হবে না। জনগণের ন্যায্য দাবিকে বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত ও সুষম উন্নয়ন হবে। পিছিয়ে পড়া এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়ন করা হবে।’

এ সময় ইনসাফ, সাম্য, মানবতা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও কোরআন এর আইন কায়েমের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের আমির।

জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকির সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কুড়িগ্রাম জেলা সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা নিজাম উদ্দিনসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

কর্মী সম্মেলন শেষে জামায়াতের আমীর নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে সীমান্ত হত্যার শিকার ফেলানীর বাড়ি যান। সেখানে তিনি ফেলানীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।