Home আন্তর্জাতিক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হামাস ১৫০০০ যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হামাস ১৫০০০ যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে

SHARE

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী বহু নতুন সদস্য নিয়োগ দিয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কংগ্রেসের কিছু সূত্র এ কথা জানিয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ খবর বলা হয়েছে।

ওই দুটি সূত্র জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ করেছে, যা ইঙ্গিত দেয়, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের জন্য একটি স্থায়ী হুমকি হয়ে থাকতে পারে।

সূত্রগুলো আরো জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে, সেই সময়ের মধ্যে একই সংখ্যক হামাস যোদ্ধাও নিহত হয়েছেন।

গাজা উপত্যকাকে ধ্বংস এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়া এই যুদ্ধ ১৫ মাস ধরে চলছে। অবশেষে গত রবিবার থেকে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।

বাইডেন প্রশাসন তাদের শেষ সময়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একাধিক নতুন তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামাস সফলভাবে নতুন সদস্য নিয়োগ দিয়েছে, তবে তাদের অনেকেই তরুণ ও অপ্রশিক্ষিত এবং সাধারণ নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

গত ১৪ জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, ফিলিস্তিনি ছিটমহলে হামাস যতসংখ্যক যোদ্ধা হারিয়েছে, তার প্রায় সমানসংখ্যক যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে।

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘এ ঘটনা একটি স্থায়ী বিদ্রোহ এবং চিরস্থায়ী যুদ্ধের একটি রেসিপি বলা যায়।
’ তিনি এ পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি। তবে ইসরায়েলি পরিসংখ্যান অনুসারে গাজায় মোট নিহত হামাস যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।

ব্লিনকেন বলেন, ‘প্রতিবার যখনই ইসরায়েল তার সামরিক অভিযান শেষ করে এবং পিছু হটে, তখনই হামাস যোদ্ধারা পুনরায় সংগঠিত হয়। তারা পুনরায় আবির্ভূত হয় কারণ, শূন্যস্থান পূরণ করার মতো আর কিছুই থাকে না।’

ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই হামাসকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করেছে।
মন্তব্যের জন্য জিজ্ঞাসা করা হলে হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি এই গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। হামাসের সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু উবাইদা জুলাই মাসে বলেছিলেন, ‘এই গোষ্ঠী হাজার হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগ করতে সক্ষম হয়েছে।’

যুদ্ধবিরতির পর থেকে হামাস গাজায় নিজেদের আবার প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই অঞ্চলের হামাস পরিচালিত প্রশাসন দ্রুত নিরাপত্তাব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং ছিটমহলের কিছু অংশে মৌলিক পরিষেবা পুনরুদ্ধার শুরু করেছে, যার বেশির ভাগই ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমেরিকান কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলেননি যে ওয়াশিংটন হামাসের কতজন যোদ্ধাকে হারিয়েছে বলে মনে করে? তারা কেবল উল্লেখ করেছেন, এই গোষ্ঠীটি উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং সম্ভবত হাজার হাজার যোদ্ধা হারিয়েছে।

হামাস সম্পর্কে গাজার ভেতর থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পরিসংখ্যান দেখায়, ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর আগে হামাসের ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার যোদ্ধা ছিল। যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি সেনারা গাজার অভ্যন্তরে তাদের কিছু অবস্থান থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটাতে পারে। সেই ধাপের শর্তাবলী নিয়ে এখনো আলোচনা করা প্রয়োজন।

পদত্যাগের ভাষণে ইসরায়েলের সামরিক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি বলেছেন, হামাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গোষ্ঠীর বেশির ভাগ সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন, গোষ্ঠীটি পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী হামাসকে আরো ভেঙে ফেলার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।

পরবর্তী ধাপগুলোতে আলোচনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার শাসনব্যবস্থা। কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, তারা হামাসকে ক্ষমতায় মেনে নেবে না। তবে হামাস এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ রবিবার বলেছেন, হামাস কখনো গাজা শাসন করতে পারবে না। যদি তারা চুক্তি থেকে সরে আসে, তাহলে ওয়াশিংটনের ‘যা করতে হবে তা করতে’ ইসরায়েলকে সমর্থন করবে।

সূত্র : রয়টার্স