কিছুতেই দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। মাঝে মধ্যে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেও পরক্ষণেই আবার টানা দরপতন দেখা যাচ্ছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা তত ভারি হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের হতাশা বাড়ছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (২৬ জানুয়ারি) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। সূচকের পতন হলেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
এর আগে টানা পতন থেকে গত সপ্তাহের শুরুতে শেয়ারবাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। গত সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকও বাড়ে। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস আবার দরপতন হয়।
এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা পার হওয়ার আগেই দাম কমার তালিকা বড় হয়ে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এ দরপতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬১টির এবং ৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৩২ পয়েন্টে নেমেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩১৮ কোটি ৪৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৫৬ কোটি ২৬ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৩৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে এডিএন টেলিকমের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ড্রাগন সোয়েটারের ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ফারইস্ট নিটিং, মালেক স্পিনিং, আফতাব অটোমোবাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৩টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।