‘গাজা দখল’ করার প্রস্তাবের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরুদ্ধে অভিশংসনের অভিযোগ আনছেন একজন ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার তিনি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে এ কথা বলেছেন। টেক্সাসের প্রতিনিধি আল গ্রিন বলেছেন, ‘ট্রাম্পের পরিকল্পনা (গাজা দখল) একটি ‘কাপুরুষোচিত কাজ’, যা জাতিগত নির্মূলের সমান।’
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেমোক্র্যাটরা নতুন ট্রাম্প প্রশাসন এবং তাদের তৈরি বিশৃঙ্খল ও ক্ষমতা দখলকারী নতুন নীতিমালার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জোরদার করতেই এই আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের কথা বলেছেন, যাকে অনেকেই অভ্যুত্থান হিসেবে দেখছে।
এর আগেও ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অভিশংসনের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা করেছিলেন আল গ্রিন। তিনি একজন উগ্র রাজনীতিবিদ। তবে তার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টায় খুব বেশি নজর কাড়বেন না বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
টেক্সাসের ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি গ্রিন সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বক্তৃতার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন।
সেখানে গ্রিন বলছেন, ‘গাজায় জাতিগত নির্মূল কোনো রসিকতা নয়, বিশেষ করে যখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টোর কাছ থেকে আসে।’
তিনি আরো বলছেন, ‘আমি ঘোষণা দিলাম, প্রস্তাবিত এবং জঘন্য এ কাজের জন্য আমি প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিরুদ্ধে অভিশংসনের ধারা আনব।’
ট্রাম্পের গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটিকে মার্কিন মালিকানাধীন ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ হিসেবে পুনর্নির্মাণের প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করে গ্রিন প্রয়াত নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের কথা উল্লেখ করেছেন। এই পরিকল্পনাকে বিশ্বব্যাপী ‘অপমানজনক, লজ্জাজনক এবং অবৈধ’ বলে নিন্দা করা হয়েছে।
গ্রিন বলেন, ‘অভিশংসন আন্দোলন একটি তৃণমূল পর্যায়ের আন্দোলন হতে চলেছে এবং যখন জনগণ এটি দাবি করবে, তখন তা হতেই হবে।’
গ্রীন বলেন, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর লজ্জিত হওয়া উচিত। তার জনগণের ইতিহাস জেনেও সেখানে দাঁড়িয়ে এই ধরনের কথা বলতে দেওয়া তার উচিত হয়নি।’
গ্রিন আরো বলেন, ‘ড.কিং ঠিকই বলেছিলেন, যেকোনো জায়গায় অবিচার করা মানে সর্বত্র ন্যায়বিচারের জন্য একটি হুমকি এবং গাজায় অবিচার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি। রাষ্ট্রপতিকে (ট্রাম্প) অভিশংসনের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে, আমি এটা বলতেই মঞ্চে উঠেছি।
’
এর আগে, ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে দুইবার অভিশংসিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরের বছরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইউক্রেনের সাহায্য চাওয়ার প্রচেষ্টায় কংগ্রেসের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য এবং ২০২১ সালে আবার জো বাইডেনের কাছে পরাজয়ের পর ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল দাঙ্গা উস্কে দেওয়ার জন্য। উভয় ক্ষেত্রেই সিনেটে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছিল।
গ্রিন বুধবার বলেন, ‘কিছু বিষয়ে, একেবারেই না দাঁড়ানোর চেয়ে একা দাঁড়ানো ভালো। এই বিষয়ে, আমি একা দাঁড়িয়েছি কিন্তু আমি ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছি।’
সূত্র: আলজাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান।