Home জাতীয় তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে রাইফেল নিয়ে প্রতিহত করবেন : সিইসি

তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে রাইফেল নিয়ে প্রতিহত করবেন : সিইসি

SHARE

নির্বাচনের সময় কেউ ‘তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে’ প্রতিপক্ষকে ‘রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর’ পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, ‘আপনি যদি (রাজনৈতিক দল) দৌড় দেন, তাহলে কী করব? আমরা সাহায্য করব।’

আজ রবিবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে তিনি এমন পরামর্শ দেন।

সিইসি বলেন, আমরা সহিংসতা বন্ধ করতে পারব না। আপনাদেরও (রাজনৈতিক দল) দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ খেলোয়াড় কিন্তু আপনারা। মাঠে খেলবেনও আপনারাই, আমরা রেফারি। আমাদের অনেক ক্ষমতা আছে, সেটা কিন্তু কম না; ক্ষমতা প্রয়োগ করবো। আমি আপনাদের স্পষ্ট করে জানাতে চাচ্ছি- গত ১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের দায় আমাদের ওপর চাপাবেন না। আমরা আমাদের নির্বাচনের দায় আমরা বহন করব।

নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ করতে কমিশন ‘সর্বাত্মক চেষ্টা করবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব দল সহযোগিতা না করলে আমরা ব্যর্থ হয়ে যাবো। আপনাদের সমন্বিত প্রয়াস থাকবে, কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকে রাইফেল বা আরেকটি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি, রাজনৈতিক দল আর সরকার এক নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। কিন্তু যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী তখন তিনি সরকার প্রধান, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নন; এটি বুঝতে হবে। আমরা সরকারের সাহায্য চাইবো। সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে নির্বাচনের পরিণতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে।

এর আগে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, ইতিপূর্বে আমরা বহুবার বলেছি যে, সব রাজনৈতিক দলের বিশেষত প্রধানতম দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেওয়া খুবই প্রয়োজন। কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অবশ্যই বাধ্য করতে পারব না। তবে সকল দলকে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে আমরা বারবার আহ্বান করে যাব। সে প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে।

সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে সব দলকে আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা না থাকলে জনমতের সঠিক প্রতিফলন হয় না। পক্ষ-প্রতিপক্ষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাঠ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সম্ভাব্য অনিয়ম, কারচুপি, দুর্নীতি, অর্থ শক্তির বৈভব ও পেশি শক্তির প্রয়োগ ও প্রভাব বহুলাংশে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।

তিনি বলেন, কমিশন সবার অংশগ্রহণ, সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। অন্যথায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের প্রয়াস যতই আন্তরিক হোক, ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। সেটা কাম্য নয়।

‘বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, একটি মাত্র দল ৩০০টি আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে সাংবিধানিকভাবে কোনও বাধা নেই। তবে ইতিহাস বলে সেক্ষেত্রে অচিরেই গণতন্ত্রের অপমৃত্যু হবে। স্বৈরতন্ত্র মাথা জাগিয়ে তুলবে। গণতন্ত্রের আরাধ্য পুনরুদ্ধার হয়ে পড়বে দুরূহ।

সিইসি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নানাবিধ আশা, হতাশা ও তর্ক-বিতর্ক চলছে। বিতর্কগুলো নিরসন হওয়া প্রয়োজন। ইতিপূর্বে কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা কয়েটি উন্মুক্ত সংলাপ করেছি। এতে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে। কমিশনের সক্ষমতা ও সাধ্যের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করে নিয়ে কারণগুলো বারবার ব্যাখ্যা করে বলেছি।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে বসে কমিশন। এই সংলাপ ধারাবাহিকভাবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে। এসময় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এনডিএম এর সঙ্গে সংলাপের পর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) সঙ্গে সংলাপ শুরু করে ইসি।