জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘দেশে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই নির্বাচনকেন্দ্রিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত হোন।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ দেশের জ্ঞানী, শিক্ষিত, মার্জিত ও অভিজ্ঞ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে।
হাজারো মানুষকে নির্যাতন করেছে, তারা শত শত মানুষকে গুম করেছে, খুন করেছে। মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে। তারা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে।’
জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কথিত উন্নয়নের নামে মানুষের গালভরা বুলি শুনিয়েছে।
সর্বশেষে তারা পর পর তিন তিনটি নির্বাচনে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই-আগস্টে আমাদের সন্তানরা ছোট একটা দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। চাকরিতে কোটা সংস্কার করতে হবে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি বন্দুকের গুলির মুখে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল।
ঠিক তখনই ছাত্ররা আগুনের মতো জ্বলে উঠেছিল। যারা আমাদের সন্তানদের ওপর গুলি চালিয়েছিল, গণহত্যা চালিয়েছিল জনগণ তাদের এক দফা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।’
ছাত্র-জনতার অবদানকে স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই জাতি দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে ইনশাল্লাহ। তরুণ-যুবসমাজ চাঁদাবাজমুক্ত, দখলবাজমুক্ত ও পেশিশক্তিমুক্ত নতুন দেশ চায়। আমরাও সাম্যের বাংলাদেশ চাই।
এই প্রজন্ম বুকের রক্ত দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা ধরে রাখব।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিগত দিনে এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা কায়েম ছিল, যে শিক্ষার সঙ্গে বাস্তব জীবনের কর্মভিত্তিক যোগ্যতার কোনো মিল ছিল না। যে কারণে আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশ-বিদেশে কাঙ্ক্ষিত চাকরি পায়নি। আমরা এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা চাই, যার মাধ্যমে সন্তানরা শিক্ষিত হয়ে দেশবাসীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্যই দেশবাসীর সেবা করবে। শিক্ষিতরা তাদের দায়-দায়িত্বগুলো বুঝতে পারবে, এমন একটি শিক্ষা আমরা চাই। আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে নৈতিকতা ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। কালো টাকা ও পেশিশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করব না। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে আসবে, তাদের না বলে দিতে হবে। আমরা কারো টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করব না। ষড়যন্ত্র চলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত হোন।’
জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম মো. আবু বকরের সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা মোবারক হোসেন, জেলা জামায়াতের আব্দুল আলীম, মতিয়ার রহমান, আবু তালেব ও হাবিবুর রহমান প্রমুখ।