Home আন্তর্জাতিক এমএলএসে মানিয়ে নিতে মেসির সময় প্রয়োজন : বেকহ্যাম

এমএলএসে মানিয়ে নিতে মেসির সময় প্রয়োজন : বেকহ্যাম

SHARE

মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) মানিয়ে নিতে লিওনেল মেসির কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছেন ইন্টার মিয়ামির মালিক সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক ডেভিড বেকহ্যাম । ইউরোপের থেকে যুক্তরাষ্ট্রের খেলার ধারা ভিন্ন বিধায় মেসিকে অবশ্যই সময় দিতে হবে।
মঙ্গলবার মেসির প্রথম অনুশীলন দেখতে ইন্টার মিয়ামি অনুশীলন গ্রাউন্ডে উপস্থিত ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক মিডফিল্ডার বেকহ্যাম। আড়াই বছরের চুক্তিতে মেসি পিএসজি থেকে মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন।
মেসির সঙ্গে অনুশীলনে আরও ছিলেন বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ সার্জিও বাসকুয়েটস। উভয়েই শনিবার মিয়ামির পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার সাবেক কোচ জেরার্ডো মার্টিনের অধীনে মেসিকে নিয়ে মাঠে নামবে মিয়ামি।
বেকহ্যাম বলেন, ‘যতই প্রতিভাবান হোক না কেন নতুন পরিবেশে মেসিকে মানিয়ে নিতে হলে কিছু সময়ের প্রয়োজন। মেসি ও সার্জিও আমাদের হয়তোবা বিস্মিত করবে, আমরা হয়তোবা জয় দিয়ে প্রতিটি ম্যাচ শেষ করতে পারবো। কিন্তু সেজন্য আমাদের ধৈর্যেরে প্রয়োজন।’
শুক্রবার লিগ কাপে মেক্সিকান ক্লাব ক্রুস আজুলের বিরুদ্ধে মেসিকে মাঠে দেখতে মিয়ামির সমর্থকদেরও কিছুটা ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়েছেন বেকহ্যাম। এই ইংলিশম্যানের মতে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার হয়তোবা মূল দলে নাও খেলতে পারেন।
এ সম্পর্কে বেকহ্যাম বলেন, ‘মেসি ম্যাচের কিছুটা সময় খেলবে। কিন্তু কার্যত সবকিছুই নির্ভর করছে কোচ ও মেসির সিদ্ধান্তের ওপর। আদৌ সে এখনই খেলতে প্রস্তুত কিনা তা কোচই বুঝতে পারবে। আমরা জানি পরিবারের সাথে সময় কাটাতে মেসি বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে ছিল। অনুশীলনে তাকে দেখে ভালোই মনে হচ্ছে, কিন্তু সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সামনে এসেই যাচ্ছে।’
২০০৭ সালে গ্যালাক্সিতে (এলএ) নাম লিখিয়ে এমএলএসকে সমৃদ্ধ করেছিলেন বেকহ্যাম। ওই সময় লিগে মাত্র ১৩টি দল অংশ নিতো। এখন দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯টি, খেলার মানও বেড়েছে।
কিন্তু বেকহ্যাম বলেছেন একটি বিষয় এখনো বদলায়নি, ‘এখনো একটি বিষয় মিল রয়ে গেছে। আমি যখন হঠাৎ এই লিগে খেলতে এসেছিলাম তখন হঠাৎই সবাই মনে করেছিল এলএ সবকিছু জয় করে নেবে। এলএ একেকটি ম্যাচে ৭-০, ৮-০ গোলে জেতা শুরু করবে, অন্য কোনো দলের কোনো খবরই থাকবে না।’
কিন্তু বেকহ্যাম আসার পর প্রথম দুই মৌসুমে গ্যালাক্সি প্লে অফেও জিততে পারেনি। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পশ্চিম কনফারেন্স লিগে এলএ তলানির থেকে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। কিন্তু ২০০৯ সালে ফাইনালে খেলার পর ২০১১ ও ২০১২ সালে এমএলএস কাপের শিরোপা জয় করে।
বেকহ্যাম বলেন, ‘ওই প্রথম দুই বছর আমার জন্য দারুন চ্যালেঞ্জিং ছিল। সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাও চ্যালেঞ্জের ছিল। ক্লাবের আবহ ও খেলোয়াড়দের মধ্যে পেশাদার মনোভাব আনতে হয়েছিল। এই লিগের মানও খুব একটা পেশাদারি ছিল না। কিন্তু দ্রুতই সবকিছুর পরিবর্তন হয়ে যায়। আমি এখানে ফুটবলকে উপভোগ করতে শুরু করি। শুধুমাত্র আমরা জেতা শুরু করেছি সে কারনে নয়। কিন্তু অন্যান্য ক্লাবের মধ্যেও পরিবর্তন আসা শুরু হয়, কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে সব জায়গায় ক্লাবগুলো পরিবর্তনে আভাস দেয়।’
যদিও ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোর তুলনায় এমএলএসের মান এখনো অনেক নিচে। মেসি তার পুরো ক্যারিয়ার ইউরোপীয়ান ফুটবলে কাটিয়েছেন। বেশ কিছু খেলোয়াড় তাদের ক্যারিয়ারের শেষ সময়টা এখানে কাটালেও তা খুব একটা সহজ ছিল না।
একেক প্রদেশের থেকে অন্য প্রদেশের সময়ের ব্যবধান, কিছু স্টেডিয়ামে কৃত্রিম টার্ফে খেলা, সতীর্থদের মধ্যে বেতনের তারতম্য, মানের পার্থক্য, প্রত্যাশা অনুযায়ী টেকনিক্যাল সাপোর্ট না পাওয়া, এসবই একজন খেলোয়াড়ের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়।
মেসির সাফল্য নিয়ে বেকহ্যামের মনে কোন শঙ্কা নেই। কিন্তু মাঠে তার প্রভাব ততটা তাৎক্ষনিক নাও হতে পারে যতটা কেউ কেউ আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে ভিন্ন স্টাইলে ফুটবল খেলা হয়। খেলার ধরনের এই ভিন্নতা অনেকেই মানিয়ে নিতে পারেনা। কিন্তু দিনের শেষে একটি আশার কথা বলতেই হয়, এ দেশেও এখন ভাল ফুটবল খেলা হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভাব ফেলছে।’